কেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হবেন | Pixency Academy
November 29, 2021 2021-12-27 7:35কেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হবেন | Pixency Academy
বর্তমান সময়ে প্রতিটি ব্যবসা বা কোম্পানির কাছে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদা ব্যপক। কারণ, প্রতিটি কোম্পানির মার্কেটিং এর জন্য তাদের প্রডাক্টকে কাস্টমারের নিকট আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করতে হয়। আর এই প্রডাক্ট সুন্দর করে উপস্থাপনের কাজই করে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design) সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন, তাহলে এই পোস্টটা আপনার জন্য। কারণ, এই পোস্টে আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করব – কেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার (Graphics Designer) হবেন?
আচ্ছা, চলুন শুরু করি। প্রথমেই জানি, গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?
গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো, গ্রাফিকাল বিভিন্ন এলিমেন্ট (টেক্সট, কালার, শেপ, পিকচার ইত্যাদি) ব্যবহার করে একটা ইনফরমেশন কে কত সহজে তাঁর টারগেট কাস্টমারের কাছে ডেলিভারি করা যায়, সেটা।
অর্থাৎ, আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার (Graphics Designer) হয়ে থাকেন আর কোন রেস্টুরেন্টের মালিক যদি আপনাকে এসে বলে- ভাই, আমার রেস্টরেন্টের জন্য একটা মেন্যু ডিজাইন করে দেন। তাহলে আপনার কাজ হবে, সুন্দর করে তাঁর রেস্টুরেন্টের খাবার গুলোর ডিটেইলস আপনি সাজিয়ে দেবেন (সেটা হতে পারে, কোন পেইজে অথবা ব্যানারে)। যাতে করে, ঐ রেস্টুরেন্টে যারা খেতে আসে, তাদের অর্ডার করার জন্য যা যা জানা প্রয়োজন সেটা সেই কাস্টমাররা খুব সহজেই বুঝতে পারে। অর্থাৎ এখানে, আপনি রেস্টুরেন্টের খাবারের ইনফরমেশন(যেমন খাবারের ছবি, দাম, পরিমাণ), মেনু ডিজাইনের মাধ্যমে অন্যকে জানাতে পারলেন। মূলত গ্রাফিক্স ডিজাইনার (Graphics Designer) হলে আপনাকে এই কাজটাই করতে হবে। অর্থাত ইনফরমেশনকে ডিজাইন করে সহজে তাঁর কাস্টমারের কাছে বুঝাতে হবে।
Table of Contents
বর্তমানে কেন গ্রাফিক্স ডিজাইন এত বেশি জনপ্রিয়? কেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হবেন?
১. চাহিদা অত্যাধিক, কিন্তু দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনারের অভাব –
আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, গত এক বছরে ইনকমার্স বিজনেস কত দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। শুধু ইকমার্স বিজনেসই না সব বিজনেসের মার্কেটিং করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন। আপনি যদি Evaly এর ফেসবুক পেইজে যান, দেখবেন তারা তাদের প্রডাক্টের মার্কেটিং এর জন্য ২/৩ ঘন্টা পর পর ই একটা করে পোস্ট দিচ্ছে। প্রতিটি পোস্টের সাথে একটা আকর্ষনীয় ইমেজ। এই ইমেজ গুলো একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারই ডিজাইন করে থাকে।
২. স্যালারী বেশি
যে পেশার ডিমান্ড বেশি, সেটার স্যালারী বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। আপনি যদি বাংলাদেশি বিভিন্ন চাকরীর ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন, তাহলে দেখতে পাবেন, সেখানে অনেক কোম্পানি গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের হায়ার করতে চাচ্ছে। সেখানে এক্সপেক্টেড স্যালারী এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও দেয়া আছে। শুধু বাংলাদেশি সাইটই না, আপনি যদি লিংকডিনে যান, সেখানেও দেখবেন, বিদেশী অনেক কোম্পানিও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের খুব ভালো বেতনে হায়ার করতে চাচ্ছে।
৩. গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এ আয় করার সুযোগ
শুধু যে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হলে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি বা অফিসে কাজ করার সুযোগ পাবেন, তা না, আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সার গ্রাফিক্স ডিজাইনারও হতে পারেন। অর্থাৎ আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট (Upwork, Fiverr, People Per Hour) এ বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন করে নিজে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি বর্তমানে পড়াশোনা অথবা গৃহিনী অবস্থায় থাকেন, তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে আপনার জন্য একটা সম্ভাবনাময় পেশা। (আয় করুন ঘরে বসেই)।
৪. প্যাসিভ ইনকাম
গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য আরেকটা সুবিধা হলো – গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা প্যাসিভ ইনকাম (Passive Income) করতে পারে। প্যাসিভ ইনকাম বিষয়টাকে আমি আপনাকে সহজ করে বুঝাই। আপনি যখন ঘুমিয়ে থাকবেন, তখনও যদি আপনার ইনকাম হয়, তাহলে সেই ইনকাম সোর্সটাই হলো প্যাসিভ ইনকাম।
গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করে থাকে। যেমন Business Card, Logo, Postcard, Social Media Banner, Poster, Billboard, T-shirt সহ আরো অনেক কিছু। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য প্যাসিভ ইনকামের অনেক ওয়েব সাইট আছে। আপনি যদি আপনার ডিজাইন সেই ওয়েবসাইটে আপলোড করে রাখেন আর সেটা যদি কোন ব্যক্তি কেনে তাহলে প্রতিবার আপনার ডিজাইন কেনার জন্য আপনি ডলার পাবেন। আপনার কাজ হলো শুধু একবার সেই সব সাইটে ডিজাইন আপলোড করে রাখা। আপনি যদি অনেক ডিজাইন আপলোড করে রাখেন, তাহলে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে দেখবেন, কেউ না কেউ আপনার ডিজাইন কিনেছে এবং আপনার একাউন্টে সেই ডলার জমা হয়েছে। বিষয়টা কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং, তাই না?
উপরের স্ক্রিনশটে দেখুন, একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার শুধু এই একটা বিজনেস কার্ডই ১০১৪ বার ৬ ডলার করে বিক্রি করেছে। অর্থাৎ সে শুধু Business Card Design করেই ইনকাম করেছে প্রায় ৬০৮৪ ডলার বা ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭২০ টাকা।
৫. কাজের ক্ষেত্র অনেক
আপনি যখন প্রথম প্রথম গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design) শিখবেন, তখন আপনাকে বিজনেস কার্ড থেকে শুরু করে লোগো, সোশাল মিডিয়া ব্যানার সব শেখানো হবে। এরপর আপনার কাছে যেটা ভালো লাগে, আপনি শুধু সেটাতে ফোকাস করে কাজ করতে পারবেন। যেমন আপনার যদি লোগো ডিজাইন ভালো লাগে, তাহলে শুধু লোগো ডিজাইন করেই খুব ভালো ইনকাম করতে পারবেন।
যেমন উপরের স্ক্রিনশর্টে দেখতে পাচ্ছেন, একটা লোগো ডিজাইন কন্টেস্টরই প্রাইজ ২৯৯ ডলার!
৬. উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন নাই
গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে উচ্চ শিক্ষিত হতে হবে বিষয়টা এমন না। আপনি যদি ক্লায়েন্ট কি লিখেছে, সেটা পড়ে বুঝতে পারেন এবং আপনি ক্লায়েন্টকে যা বলতে চাচ্ছেন, সেটা সঠিক ভাবে বুঝাতে পারেন তাহলেই হবে। আর প্যাসিভ ইনকামের ক্ষেত্রে তো তাও লাগে না। সিস্টেম মত ফাইল আপলোড করলেই ইনকাম করা পসিবল।
এমন অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা মাত্র ক্লাস এইট নাইনে পড়ে, এমন ছেলে মেয়েরাও গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনেক ভালো ইনকাম করছে এবং পরিবারে কন্ট্রিবিউট করতেছে, পাশাপাশি পড়ালেখার খরচও নিজেই চালাতে পারছে।
৭. কর্মক্ষেত্রের বাইরেও আপনি থাকবেন এগিয়ে
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আপনি ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি আপনার পরিচিত বন্ধু বান্ধবের ছবি এডিট করতে পারবেন, তাদের বিভিন্ন অকেশনে বিভিন্ন ডিজাইন করে ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানাতে পারবেন। এছারাও আপনি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসেন্টেশন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ডিজাইন রিলেটেড কাজ করতে পারবেন। আর আপনি যদি কোন কোম্পানিতে থাকেন, সেইখানে ছোট ছোট ডিজাইনের কাজগুলো যদি আপনিই করে দেন, তাহলে অফিসের সবার কাছে তো আপনার ইম্প্রেশন ভালো থাকবেই।
এছাড়াও আপনার যদি কোন ইউটিউব চ্যানেল থাকে, তাহলে সেই চ্যানেলের ভিডিওর জন্য বিভিন্ন থাম্বনেইল ডিজাইন করতে পারবেন, যা আপনার চ্যানেলের ভিউ বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
আবার গ্রাফিক্স ডিজাইন করে যে, শুধু আপনি ফ্রিল্যান্সিং বা অন্যোর অফিসে চাকরী করবেন বিষয়টা এমন না। আপনি চাইলে আপনার এলাকায়, বিলোবোর্ড, নির্বাচনের পোস্টার বা ছবি তোলার স্টুডিও দিয়েই ভালো ইনকাম করতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ।
৮. পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং
আপনি যে পেশায়ই থাকেন না কেন, আপনি যদি নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করতে চান তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার লাগবেই। গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো অন্যসব স্কিলের মেজর স্কিল। পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্বীয় স্বজন এবং কর্মক্ষেত্রের সবার মাঝে নিজের পজেটিভ ইম্প্রেশন করতে পারবেন।
৯. Ui/UX Designer হতে চাইলে সেটাও পারবেন
গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো অন্যসব স্কিলের মেজর স্কিল। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনে ভালো করতে পারেন, তাহলে পরবর্তীতে UI/UX Designer হওয়া আপনার জন্য সহজ হবে। ইউআই/ইউএক্স ডিজাইন সম্পর্কে জানতে এটা পড়ুন – UI vs UX: সম্পর্ক এবং পার্থক্য কি?
Pixency Academy তে UI/UX Design course করতে চাইলে এই লিংকে দেখুনঃ UI/UX Design Course
১০. ক্রিয়েটিভ সেক্টর
গ্রাফিক্স ডিজাইন একটা ক্রিয়েটিভ সেক্টর। আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হন, তাহলে প্রতিনিয়ত আপনি এখান থেকে বিভিন্ন বিষয় শিখতে পারবেন এবং সেই সাথে নিজের প্রতিভা প্রকাশেরও দারুন সুযোগ পাবেন।
আপনার যদি মনে হয়, আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design Course in Bangla) বাংলায় শিখবেন, তাহলে আপনার জন্য Pixency Academy হতে পারে একটা পারফেক্ট ট্রেনিং সেন্টার। কারণ, Graphics Design Course অথবা UI/UX Design Course করার জন্য বাংলাদেশে পিক্সেন্সী একাডেমী অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্টরা এখন দেশি এবং বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানিতে সুনামের সাথে কাজ করছে, আপনি একটু খোঁজখবর নিলেই জানতে পারবেন।
আর আপনাকে শুধু সফটওয়ার শিখলেই হবে না, আপনাকে বুঝতে হবে, জানতে হবে – আপনার ডিজাইনের মাধ্যমে টারগেট কাস্টমারের কাছে কিভাবে আরো সহজে এবং আকর্ষনীয় ভাবে ইনফরমেশন পৌছানো যায়। সফটওয়ার শেখা আর ডিজাইন শেখা দুইটার মধ্যে পার্থক্য অনেক। আপনি যদি ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হন, তাহলে আপনার সময় এবং টাকা দুইটাই নষ্ট হবে। এবং আপনার মধ্যে এই সেক্টর সম্পর্কে অনেক ভীতি জন্মাবে।
Pixency Academy আপনাকে সাহায্য করবে বিভিন্ন টিপস এন্ড ট্রিক্স দেয়ার মাধ্যমে। পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন রিসোর্স, অলটাইম সাপোর্ট পাবেন। আর ডিজাইন কিভাবে উন্নতি করা যায় বা আপনার প্রভলেম নিয়ে রেগুলার মিটিং এ বিস্তারিত কথা বলতে পারবেন।
Pixency Academy এর ক্লাস ভিডিও দেখতে চাইলে এখানে ভিজিট করুন – Pixency Academy Class
বর্তমানে Pixency Academy এর স্টুডেন্টরা কিভাবে কাজ করছে তা জানার জন্য তাদের ফেসবুক গ্রুপের পোস্টগুলো দেখুন। ফেসবুক গ্রুপ লিংক – Pixency Community