চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং, কোন ক্যারিয়ার আপনার জন্য ভালো হবে?
January 22, 2022 2022-02-02 7:38চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং, কোন ক্যারিয়ার আপনার জন্য ভালো হবে?
ফ্রিল্যান্সিং এবং চাকরি- এই দুইটার মাঝে বিস্তর ফারাক। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) যারা করে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সার (Freelancer) রা যেমন নিজেদের লাইফ স্টাইল পছন্দ করে, তেমনিভাবে এমন কিছু মানুষও আছে যারা চাকরি করতেই বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
চাকরি (Job) নাকি ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing), কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে এবং চাকরিজীবি ও ফ্রিল্যান্সার হলে কি কি সুবিধা-অসুবিধা আপনি পাবেন, আজকের আর্টিকেলে আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
Table of Contents
Freelancing কি? কাদেরকে Freelancer বলা হয়?
Freelancing শব্দটার বাংলা অর্থ হলো- মুক্তপেশা। অর্থাৎ, কারো অধীনে না থেকে নিজের স্বাধীনতামত কাজ করাকেই ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) বলে। অন্যসব চাকরীর থেকে এই ফ্রিল্যান্সিং এর পার্থক্য হলো এখানে আপনি আপনার পছন্দ মতো কাজ করতে পারবেন। আপনি মন চাইলে কাজ করবেন, না চাইলে করবেন না। এবং ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে আপনাকে অফিসেই যেতে হবে বিষয়টা এমন না। আপনি চাইলে ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। কিন্তু এখানে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি যদি কোন কাজ নেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই কাজটা কমপ্লিট করে দিতে হবে।
অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারলাম, ফ্রিল্যান্সার(Freelancer) রা যে কাজ গুলো করেন, সেগুলা সে করবে কি না, এটা বাছাই করার তাঁর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। এবং ফ্রিল্যান্সারদের কাজ করার জন্য স্পেসিফিক টাইম টেবিল এবং স্থান বিবেচ্য বিষয় নয়। নির্দিষ্ট ডেটলাইনের মধ্যে কাজটা কমপ্লিট করে দিলেই হবে এবং আপনি বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ করতে পারেন।
আর যারা এই ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) করে, তাদেরকেই ফ্রিল্যান্সার(Freelancer) বলে বা তারা ফ্রিল্যান্সার (Freelancer) হিসেবে অনলাইন কমিউনিটিতে পরিচিত।
অন্যদিকে যারা চাকরী করে তাদের নির্দিষ্ট টাইম মেইন্টেন করে অফিস করতে হয় এবং তাদেরকে অথরিটি বা অফিসের বস যে কাজটা দেয় সেই কাজটা সে করে দিতে বাধ্য। অর্থাৎ চাকরীতে নিজের স্বাধীনতা কম এবং রেগুলার একটা টাইম মেইন্টেন করতে হয়।
চাকরী নাকি ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing)
চলুন আমরা ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এবং চাকরী- এই দুইটার সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করি এবং তারপর আসলে ঠিক করি, চাকরী নাকি ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে?
1. ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের খরচ যোগাড় করা সম্ভবঃ
এমন অনেকেই আছে, যারা বর্তমানে পড়াশোনা করছে- তারা নিজের হাতখরচটা নিজেই যোগাতে চায়। কিন্তু হয়তোবা নিজের পড়াশোনার কোয়ালিফিকেশনের কারণে কোথাও চাকরি হচ্ছে না- এমন কেউ চাইলে খুব সহজেই ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারে। স্কিল থাকলে নিজের হাতখরচটা সহজেই ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) থেকে যোগাড় করা সম্ভব। এবং ফ্রিল্যান্সিং এ বেশি সিরিয়াস না হলে অর্থাৎ মোটামোটি অর্ডার কমপ্লিট করলে পড়াশোনার ক্ষতিও হবে না বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও যারা স্টুডেন্ট তারা প্যাসিভ ইনকাম (Passive Income) করেও মাসে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন। প্যাসিভ ইনকাম (Passive Income) নিয়ে আরো জানার জন্য
2. নিজের পছন্দের বিষয়ে কাজ করার স্বাধীনতাঃ
যারা বিভিন্ন চাকরি করেন, তারা প্রতি দিন একই ধরনের কাজ করেন। একই ধরনের কাজ করতে করতে অনেক সময় বিরক্তি আসতে পারে কাজে। কিন্তু যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন, তারা প্রায় সময়ই বিভিন্ন টপিক অথবা বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করে থাকেন। একজন UI/UX Designer যেমন একটা Real Estate Agency এর জন্য Design করে তেমনি ভাবে এই UI/UX Designer ই, Telemedicine App এর জন্যও Design কোরে থাকে। অপর দিকে একজন চাকরিজীবি প্রতিদিন প্রায় একই ধরনের কাজ কোরে থাকে। তাঁর কাজ নিজের পছন্দ মত টপিকে করার তেমন কোন স্বাধীনতা নেই। একজন Freelance UI/UX Designer চাইলে Fashion Beauly Website Design স্কিপ কোরে অন্য টপিক বা ইন্ডাস্ট্রির জন্যও কাজ করতে পারে।
3. অফিসে যাওয়ার ঝামেলা নেইঃ
অফিসে যাওয়াটা যে কত ঝামেলার সেটা একমাত্র একজন চাকরিজীবিই বুঝতে পারে। বাইরে বের হলে এত ধুলাবালি, সড়কের বেহাল দশা, যানজট, যানবাহনের ভাড়া এবং এছাড়াও অফিসে যেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সেই সাথে অফিসে যেতে আসতে দিনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। যেহেতু ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, সেহেতু ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটা খুব বড় একটা সুবিধা।
4. দ্রুত সময়ে বেশি ইনকাম করার উপায়ঃ
ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম কত করা যাবে- এটা সম্পূর্ণ আপনার স্কিলের উপর নির্ভর করে। আপনি যদি একজন High Skilled Freelancer হন, তাহলে আপনি মাসে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। এবং ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম এর কোন লিমিট নাই। আপনি একটা কাজ সম্পূর্ণ করে যত তাড়াতাড়ি দিয়ে অন্য কাজ শুরু করতে পারবেন, আপনার ইনকাম ততই দ্রুত বাড়বে।
5. পরিবারের সাথে সময় কাটানোর সুযোগঃ
ঘরে বসে যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, সেহেতু যারা ফ্রিল্যান্সার তারা চাকরিজীবিদের তুলনায় বেশি সময় পরিবারকে দিতে পারেন। অনেকেই চায়, সুন্দর পরিবেশে বাবা-মা পরিবার নিয়ে সবসময় একসাথে থাকতে। যারা ফ্রিল্যান্সিং করে শুধু তাদের ক্ষেত্রেই এটা সম্ভব।
এবার চলুন জানি- চাকরি করার সুবিধা গুলো কি কিঃ
১. নেটওয়ার্কিং বাড়েঃ চাকরি করার খুব বড় একটা সুবিধা হলো- চাকরি করলে নতুন অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়। অফিসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে অনেক লোক আসে, পাশাপাশি কাজ করার ফলে তাদের সাথে নেটওয়ার্কিং বাড়ে। ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু একা একা ঘরে বসেই কাজ করা যায়, সেজন্য ফ্রিল্যান্সারদের নেটওয়ার্কি বা নতুন মানুষদের সাথে তেমন পরিচয় বাড়ে না।
২. সুশৃংখল জীবণঃ চাকরি হলো একটা নির্দিষ্ট টাইম মেইনটেন করে করতে হয়। অর্থাৎ যত কাজই থাকুক সময় শেষ হলে অফিস ছুটি। অর্থাৎ নির্দিষ্ট টাইমের পর চাকরিজীবিদের ছুটি।
৩. চাকরি করাটা সন্মানেরঃ চাকরি করাটা সমাজের লোকের কাজে সন্মানের। বেতন যত কমই হোক, কেউ যদি চাকরি করে সেটা সমাজের মানুষ একটু ভালো নজরে দেখে।
প্রত্যেক জিনিসের ভালো খারাপ দুইটাই রয়েছে। চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) -এগুলারও নেগেটিভ দিক রয়েছে। এবার চলুন জানি চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এই দুইটার অসুবিধাগুলো।
চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) এই দুইটার অসুবিধাগুলোঃ
১. বাড়তি ইনকামের সুযোগ নেইঃ যারা চাকরিজীবি তারা প্রতি মাস শেষে একটা নিদ্দিষ্ট পরিমাণ স্যালারি পায়। এই স্যালারি দিয়েই তাদের যাবতীয় খরচ করতে হয়। সময় বাড়ার সাথে সাথে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও সেই তুলনায় স্যালারি বাড়ে না।
২. সবসময় সিনিয়রদের প্রেশারে থাকতে হয়ঃ নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা কম থাকার কারণে অফিসে সবসময় বস বা সিনিয়র স্টাফদের কাজের প্রেশারে থাকতে হয়।
৩. নিজের স্বাধীনতা কমঃ অফিস থেকে যে কাজ দেয়া হয়, সেটাই করতে হয় চাকরি করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা কম।
ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) করার অসুবিধাঃ
১. স্বাস্থ্যঝুকিঃ নতুন অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং করতে অনেক রাত জাগতে হয় নিজের ফ্রিল্যান্সিং আইডিকে স্ট্যাবল করার জন বা এক্সপেরিয়ান্স বাড়ানোর জন্য। এবং মাঝে মাঝে কাজের অনেক চাপ থাকে, একসাথে কয়েকটা প্রজেক্টেকাজ করার ফলে অনেক সময় ঘুম, খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করা হয় না এবং পরিবারের সাথে পর্যাপ্ত সময়ও কাটানো হয় না। তবে ফ্রিল্যান্সিং আইডি স্ট্যাবল হওয়ার পর পরিচিত
২. নির্দিষ্ট ইনকামের গ্যারান্টি নাইঃ ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো- এখানে প্রতি মাসেই যে ইনকাম হবে এটার কোন নিশ্চয়তা নাই। কোন মাসে অনেক বেশিও ইনকাম হতে পারে আবার কোন মাসে কম ইনকামও হতে পারে। প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে, ফ্রিল্যান্সিং ইনকাম আসলে অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে। Freelancing work quality, response rate এবং আরো কিছু বিষয় আছে যার জন্য ফ্রিল্যান্সিং আইডির মাঝে মাঝে অনেক বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে আর এজন্য সবসময় আশানুরুপ ইনকাম নাও হতে পারে।
উপরের পয়েন্টগুলোতে থেকে আমরা-চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং এই দুইটার সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো বুঝতে পারলাম। এখন আমরা এই সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো বিবেচনা করে বুঝতে পারব যে, চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং কোনটা আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো – নতুনদের জন্য গাইডলাইন
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এ নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে চান, তাহলে Pixency Academy হতে পারে আপনার জন্য একটা Best skill development training center।
Graphics Design Course অথবা UI/UX Design Course করার জন্য বাংলাদেশে পিক্সেন্সী একাডেমী একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। আর আপনাকে শুধু সফটওয়ার শিখলেই হবে না, আপনাকে বুঝতে হবে, জানতে হবে – আপনার ডিজাইনের মাধ্যমে টারগেট কাস্টমারের কাছে কিভাবে আরো সহজে এবং আকর্ষনীয় ভাবে ইনফরমেশন পৌছানো যায়। সফটওয়ার শেখা আর ডিজাইন শেখা দুইটার মধ্যে পার্থক্য অনেক। আপনি যদি ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হন, তাহলে আপনার সময় এবং টাকা দুইটাই নষ্ট হবে। এবং আপনার মধ্যে এই সেক্টর সম্পর্কে অনেক ভীতি জন্মাবে।
Pixency Academy আপনাকে সাহায্য করবে বিভিন্ন টিপস এন্ড ট্রিক্স দেয়ার মাধ্যমে। পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন রিসোর্স, অলটাইম সাপোর্ট পাবেন। আর ডিজাইন কিভাবে উন্নতি করা যায় বা আপনার প্রভলেম নিয়ে রেগুলার মিটিং এ বিস্তারিত কথা বলতে পারবেন।
বর্তমানে Pixency Academy এর স্টুডেন্টরা কিভাবে কাজ করছে তা জানার জন্য তাদের ফেসবুক গ্রুপের পোস্টগুলো দেখুন। ফেসবুক গ্রুপ লিংক – Pixency Community